নিজস্ব সংবাদদাতা: কথায় আছে ইতিহাস ফিরে আসে বারবার। বছরের পর বছর ইতিহাস বারবার ফিরে আসে আমাদের গৃহ চক্রে। তার মধ্যে আবার বয়ে চলে বিভিন্ন বিতর্ক।পৃথিবীর এক ভাগ স্থল এবং তিন ভাগ জল। আর এই তিন ভাগ জলের মধ্যে শতকরা দুই ভাগই মানুষের অজানা। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর ধরে সমুদ্রের তলায় চালিয়েছে সন্ধান। কখনও ফুটে উঠেছে কোনও ইতিহাস আবার কখনও বা খোঁজ পাওয়া গিয়েছে অজানা সামুদ্রিক প্রাণীর।ঠিক সেইভাবেই এবার এক পর্বতমালার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে সমুদ্রের অতলে ডুব দিয়ে। সমুদ্রের তলায় একটি অনুসন্ধানকারী দল পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয় কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের তরফে।সেই পর্বতমালার বয়স প্রায় দু’কোটি বছর!‘
ভেসেল ইনভেস্টিগেটর’-এর মাধ্যমে আন্টার্কটিকা এবং তাসমানিয়া এলাকার মধ্যবর্তী ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে চালানো হয় সন্ধান।দক্ষিণ মহাসাগরে অনুসন্ধান চালানো হয়, সিএসআইআরও-এর তরফে ‘হাই রেজ়োলিউশন ম্যাপিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করে।‘আন্টার্কটিক সারকামপোল কারেন্ট’ নামে যে তীব্র গতির স্রোত মহাসাগরের যে অংশে বয়ে যায়, সেখানেই সিএসআইআরও অতলে খোঁজ চালিয়েছে।এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে , চার হাজার মিটার গভীরে দক্ষিণ মহাসাগরের নির্দিষ্ট একটি এলাকায় আটটি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল আগেই।
সম্প্রতি সিএসআইআরও সমুদ্রের তলায় আটটি আগ্নেয়গিরির মধ্যে চারটি আগ্নেয়গিরি আবিষ্কার করেছে।সেই সূত্রে জানা গিয়েছে,১৫০০ মিটারের কাছাকাছি কোনও কোনও আগ্নেয়গিরির উচ্চতা।পাশাপাশি সূত্রের খবরে জানা গিয়েছে, চারটি আগ্নেয়গিরির সন্ধান পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন সিএসআইআরও-এর ভূতত্ত্ববিদ ক্রিস ইউলে।শুধু তাই নয়,তিনি চ্যুতিরেখা বরাবর চারটি আগ্নেয়গিরির গুরুত্বসহ সেগুলির পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনাও ভাগ করে নেন সকলের সঙ্গে।ক্রিস জানান,আগ্নেয়গিরিগুলির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে ম্যাককুয়েরি দ্বীপ থেকে ৩৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে ম্যাককুয়েরি রিজের কাছে।
এই অঞ্চলে গত দু’কোটি বছর ধরে সঞ্চয় হয়েছে ম্যাগমা।এই খবর সূত্রে ‘ফোকাস’-এর বিজ্ঞানী বেনোইট লেগ্রেসি জানিয়েছেন,”কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নির্গমন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সমুদ্রে তার প্রভাব পড়ে।পাশাপাশি, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে যে পরিমাণ তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, তা ছড়িয়ে পড়ে সমুদ্রের গভীরে। ফলে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে সমুদ্রের গতিপ্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে সেগুলোর বর্ণনা করা।”
তবে একটি সংশয় থেকেই যায়,সেটি হল : যে আগ্নেয়গিরিগুলি দু’কোটি বছর পুরনো পর্বতমালার উপর রয়েছে, সেগুলি কোনও দিন আদৌ ফাটবে না কি সারাজীবন সেগুলি সুপ্ত অবস্থাতেই থাকবে?এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি এখনও।তাই এই প্রশ্নের উত্তর দেবে ‘সময়’।সময়ের সাথে সাথে আগ্নেয়গিরিগুলির আদৌ কোনো পরিবর্তন হবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।