তীব্র গরমে প্রাণ নাজেহাল? এই ক্লান্তি ঘুচোনোর জন্য ঘুরে আসুন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে। আর এই মারাত্মক গরমে হাসফাঁস হওয়ার আবহাওয়ার মাঝে একটু স্বস্তির অবকাশ দিতে পারি সবুজে ঘেরা পাহাড়ের বনভূমি। প্রকৃতির মাঝে আনন্দ খুঁজে পেতে মহানন্দা অভয়ারণ্যের এই ছোট্ট পাহাড়ি গ্রামটিতে ঘুরে আসতে পারেন। কি ভাবছেন তো? কোন জায়গায় কথা বলছি? দার্জিলিং নাকি কালিম্পং? চলুন তাহলে দেখে নিই কোন গ্রামের কথা বলছি –
আপনি যদি অফিসের দু একদিন ছুটির অবকাশে হল আরামদায়ক পরিবেশ থেকে ঘুরে আসতে চান তাহলে এটি আপনার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পাহাড়ি ঘেরা এই ছোট্ট গ্রামে থাকছে হোমস্টে এর ব্যবস্থা অর্থাৎ আপনি আপনার পুরো পরিবার নিয়ে সহজে আসতে পারবেন। ৪২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামটির নাম হল লাটপাঞ্চার।
নামটা খুব অদ্ভুত তাই না? লাট পাঞ্চার একটি লেপচা শব্দ। লাট কথার অর্থ হল ‘বেত ‘আর পাঞ্চার কথার অর্থ হলো ‘জঙ্গল’। জঙ্গলে ঘেরা নিরিবিলি শান্তশিষ্ট এই গ্রামের দুই দিকে রয়েছে সবুজে ঘেরা পাহাড়। দুই পাহাড়ের মাঝে তরাই সমতলে এঁকেবেঁকে চলেছে তিস্তা নদীর স্রোত। নদীর পাশেই গজে উঠেছে সিঙ্কোনা ,পাইন গাছের বন। যদিও পরিবহন ব্যবস্থা অতটা উন্নত নয় তবে গ্রামটি কিন্তু যথেষ্ট পরিস্কার এবং রাস্তাঘাট যথেষ্ট পরিষ্কার।
এছাড়াও এই গ্রামের আরো একটি বিশেষত্ব হচ্ছে পাহাড়িয়া পাখির দর্শন। মহানন্দা অভয়ারণ্যের উপরে অবস্থিত এই লাটপাঞ্চার গ্রামে দেখা মিলবে অনেক রকম হিমালয়ান পাখির। আর আপনি যদি ওয়াইল্ডলাইফ ফটোশুটের প্রেমী হন, তাহলে অবশ্যই কিন্তু আপনাকে একবার এই গ্রামে আসতে হবে।
এই লাটপাঞ্চার গ্রামে প্রায় ২৬০ টি প্রজাতির পাখি এবং ৪০টি প্রজাতির পাহাড়ি বন্যপ্রাণী দেখা মিলবে। এই গ্রাম থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে সানসেরিদারা ভিউ পয়েন্ট, যদি আপনার ভাগ্য ভালো থাকে এবং আকাশে মেঘের চিহ্ন না থাকে তাহলে আপনি এই খানে দাঁড়িয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার সৌভাগ্য পাবেন।
এই অসহ্য গরমে একটু আরামের স্বাদ নিতে দুদিনের জন্য একবার ঢু দিয়ে আসতে পারেন এই ছোট্ট পাহাড়িয়া গ্রামে। একটানা কাজের চাপ আর পলিউশন থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই একটা আরামদায়ক পরিবেশ। শিলিগুড়ি থেকে সেবক রোড ধরে কালিম্পং যাওয়ার পথে কালীজোড়া থেকে বাঁ দিকে বাঁক নিলেই পড়বেই এই লাটপাঞ্চার গ্রাম।